হঠাৎ
করেই দেশের রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিএনপির গণমিছিল কর্মসূচিকে
কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। চাঁদপুর ও
লক্ষ্মীপুরে পুলিশের গুলিতে চারজন মারা গেছেন। এই প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক
পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আবদুল
মান্নান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল
৩০ জানুয়ারি বিএনপির গণমিছিল শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে, শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করেছে আওয়ামী লীগও। এটি যেমন আমাদের স্বস্তি দিয়েছে, তেমনি জোরালো করেছে কিছু প্রশ্নও। সত্যিই কি নাশকতার কোনো আশঙ্কা ছিল ২৯ জানুয়ারির কর্মসূচিতে, যদি ছিলই তাহলে ৩০ তারিখে কীভাবে শান্তিপূর্ণভাবে হলো গণমিছিল? আশঙ্কা যদি নাই ছিল তাহলে কেন পুলিশ হঠাৎ করে ২৯ জানুয়ারি গণমিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল চারটি বড় বিভাগীয় শহরে? আরও যা প্রশ্ন, কেনইবা একই ধরনের কর্মসূচি পালনে বাধা দিতে গিয়ে আগের দিন দেশের অন্যান্য অঞ্চলে গুলি বর্ষণ করল পুলিশ?
২৯ জানুয়ারি পুলিশের গুলিতে (চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুরে) প্রাণ হারিয়েছেন চারজন মানুষ, আহত হয়েছেন চার শতাধিক। তাঁরা বিএনপির কর্মী হতে পারেন, নাও হতে পারেন। মূল বিষয় হচ্ছে, পুলিশ এদিন গুলি চালিয়েছে বিএনপির নেতৃত্বে গণমিছিলের মতো একটি গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালনকালে। কর্মসূচি পালনকালে নাশকতা দূরে থাক, বড় ধরনের সহিংসতা হয়েছে, এমন কোনো খবরও ৩০ জানুয়ারির পত্রিকায় প্রকাশিত হয়নি। সরকারের পুলিশ তাহলে মাত্রাতিরিক্ত মারমুখী আর নির্মম হয়ে উঠল কেন?
সরকারের এ আচরণ কিছুটা আকস্মিক, তবে কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। মাত্র পাঁচ দিন আগে মাহী বি. চৌধুরীর ব্লু ব্যান্ড কল নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের কর্মসূচি লাঠিপেটা করে পন্ড করে দেওয়া হয়। সিপিবিকে কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেওয়া হয়নি নির্ধারিত স্থানে। বিএনপির ক্ষেত্রে সরকারের কঠোরতা ছিল আরও খোলামেলা। কর্মসূচির আগের তিন-চার দিন সরকারের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত কিছু মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী নানাভাবে জানিয়ে দেন বিএনপিকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ পূর্বঘোষিত বিএনপির গণমিছিলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেয় ২৯ জানুয়ারি, পুলিশি নিষেধাজ্ঞার কারণে বিএনপি চার বিভাগীয় শহরের গণমিছিল একদিন পিছিয়ে ৩০ জানুয়ারিতে নিয়ে গেলে সেদিনও প্রায় একই স্থান ও সময়ে আবারও কর্মসূচি ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। ২৯ তারিখে ঘটে গুলিবর্ষণের ঘটনা!
সার্বিকভাবে সরকারের আচরণ ছিল উসকানিমূলক ও দমনমূলক। এর আগে বিএনপির কিছু কর্মকাণ্ডেও উসকানি ছিল। ডিসেম্বরের মধ্যে সরকার পতনের ডাক, ডিসেম্বরের কিছু কর্মসূচিতে সহিংসতা, খালেদা জিয়া কর্তৃক সেনাবাহিনীতে গুমের অভিযোগ এবং কিছু সেনাসদস্য কর্তৃক সেনা অভ্যুত্থানের অপচেষ্টা—এসব ঘটনা সরকারের জন্য অবশ্যই উদ্বেগজনক ছিল। কিন্তু সরকারকে মনে রাখতে হবে কোনো আশঙ্কা বা উদ্বেগ থাকলে এর প্রতিকারও আছে সরকারের কাছে। গোয়েন্দা, পুলিশ ও প্রশাসনের মাধ্যমে আশঙ্কামূলক তথ্যের সত্যতা যাচাই এবং সে অনুসারে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা, অধিকার ও সুযোগ সরকারের রয়েছে। জনগণের কাছে নাশকতা বা যড়যন্ত্রের কোনো বিশ্বাসযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পেশ না করে বিরোধী দলের এ ধরনের কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করার অধিকার সরকারের নেই। বিশেষ করে ২৯ জানুয়ারি পুলিশ যে নৃশংসতা দেখিয়েছে তা সমর্থন করার মতো কোনো পরিস্থিতি অকুস্থলগুলোতে ছিল না।
সরকারের কাছে আমাদের দাবি থাকবে ২৯ জানুয়ারির ঘটনায় সরকারের ভেতরের কোনো হঠকারী গোষ্ঠীর ভূমিকা ছিল কি না তা খুঁজে বের করা এবং এ ধরনের গোষ্ঠীর প্রাধান্য প্রতিহত করা। ২৯ জানুয়ারি পুলিশ কর্তৃক ডিসপ্রপোরশনেট (অ-সমানুপাতিক) শক্তিপ্রয়োগের যে ঘটনা ঘটেছে তার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করা।
সরকারের কাছে আবেদন থাকবে তারা কোনো কারণে অতিরিক্ত নার্ভাসনেসে ভুগছে কি না তা খতিয়ে দেখার। জানুয়ারির পর পুরো ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা থাকার কারণে বিএনপির তেমন কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না। ফলে ২৯ জানুয়ারি নির্বিঘ্নভাবে কর্মসূচি পালন করতে দিলেও বিএনপি তার শক্তি বা ব্যাপ্তি ফেব্রুয়ারিতে অব্যাহত রাখতে পারত না, সরকারের জন্য বড় কোনো সমস্যাও তৈরি করতে পারত না। ২৯ জানুয়ারি কর্মসূচি প্রতিহত করতে গিয়ে তাহলে সাধারণ মানুষকে হত্যার কলঙ্ক গ্রহণ করার কী প্রয়োজন ছিল সরকারের? মার্চে বিএনপির বড় কর্মসূচি আছে। এ রকম বৃহৎ কর্মসূচি আওয়ামী লীগও গত আমলে পালন করেছে, তাতে সরকারের পতন ঘটে যায়নি, এবারও ঘটবে এমন ভেবে ব্যতিব্যস্ত হওয়ার তেমন কোনো কারণ ঘটেনি।
সরকারের সঙ্গে বিরোধী দলের আসল বিরোধ ক্ষমতা নিয়ে। বিএনপি বদ্ধমূলভাবে বিশ্বাস করে যে আগামী সংসদ নির্বাচনে কারচুপি করার উদ্দেশ্য রয়েছে বলেই আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় রাজি হচ্ছে না। একই বিশ্বাস থেকে ১৯৯৬ সালে বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলন করেছিল আওয়ামী লীগ। সেটি যদি যৌক্তিক হয়ে থাকে তাহলে নিয়মতান্ত্রিক পথে গণ-আন্দোলন করার এবং এর মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনঃস্থাপনে চাপ সৃষ্টির অধিকার বর্তমান বিরোধী দলগুলোরও রয়েছে। গণ-আন্দোলনের পাশাপাশি বা এর আড়ালে যদি কোনো যড়যন্ত্রের চেষ্টা করা হয় সেটি প্রতিহত করার বৈধতা অবশ্যই সরকারের রয়েছে। কিন্তু তাই বলে গণ-আন্দোলনের বিকাশকে শক্তিপ্রয়োগের মাধ্যমে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করার কোনো অধিকার সরকারের নেই।
ভালো হয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমতার আগাম যুদ্ধ স্থগিত রাখে। ভালো হয় যদি অন্তত আগামী শীত পর্যন্ত মামলা, হামলা ও ভয়ভীতির মাধ্যমে বিএনপিকে খর্ব ও দুর্বল করার চেষ্টা বন্ধ থাকে, সরকারের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত আন্দোলনের চেষ্টাও স্থগিত থাকে। মোকাবিলাই যদি অনিবার্য হয়ে পড়ে তাহলে দুই দলের উচিত উপযুক্ত সময়ে জনসমর্থনের জোরে নিয়মতান্ত্রিক পথে তা করা। তবে তার আগে অবশ্যই তাদের কর্তব্য হলো সংসদ ও প্রয়োজনে সংসদের বাইরে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজার সর্বাত্মক চেষ্টা করা।
আসিফ নজরুল: অধ্যাপক, আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
৩০ জানুয়ারি বিএনপির গণমিছিল শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে, শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করেছে আওয়ামী লীগও। এটি যেমন আমাদের স্বস্তি দিয়েছে, তেমনি জোরালো করেছে কিছু প্রশ্নও। সত্যিই কি নাশকতার কোনো আশঙ্কা ছিল ২৯ জানুয়ারির কর্মসূচিতে, যদি ছিলই তাহলে ৩০ তারিখে কীভাবে শান্তিপূর্ণভাবে হলো গণমিছিল? আশঙ্কা যদি নাই ছিল তাহলে কেন পুলিশ হঠাৎ করে ২৯ জানুয়ারি গণমিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল চারটি বড় বিভাগীয় শহরে? আরও যা প্রশ্ন, কেনইবা একই ধরনের কর্মসূচি পালনে বাধা দিতে গিয়ে আগের দিন দেশের অন্যান্য অঞ্চলে গুলি বর্ষণ করল পুলিশ?
২৯ জানুয়ারি পুলিশের গুলিতে (চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুরে) প্রাণ হারিয়েছেন চারজন মানুষ, আহত হয়েছেন চার শতাধিক। তাঁরা বিএনপির কর্মী হতে পারেন, নাও হতে পারেন। মূল বিষয় হচ্ছে, পুলিশ এদিন গুলি চালিয়েছে বিএনপির নেতৃত্বে গণমিছিলের মতো একটি গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালনকালে। কর্মসূচি পালনকালে নাশকতা দূরে থাক, বড় ধরনের সহিংসতা হয়েছে, এমন কোনো খবরও ৩০ জানুয়ারির পত্রিকায় প্রকাশিত হয়নি। সরকারের পুলিশ তাহলে মাত্রাতিরিক্ত মারমুখী আর নির্মম হয়ে উঠল কেন?
সরকারের এ আচরণ কিছুটা আকস্মিক, তবে কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। মাত্র পাঁচ দিন আগে মাহী বি. চৌধুরীর ব্লু ব্যান্ড কল নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের কর্মসূচি লাঠিপেটা করে পন্ড করে দেওয়া হয়। সিপিবিকে কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেওয়া হয়নি নির্ধারিত স্থানে। বিএনপির ক্ষেত্রে সরকারের কঠোরতা ছিল আরও খোলামেলা। কর্মসূচির আগের তিন-চার দিন সরকারের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত কিছু মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী নানাভাবে জানিয়ে দেন বিএনপিকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ পূর্বঘোষিত বিএনপির গণমিছিলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেয় ২৯ জানুয়ারি, পুলিশি নিষেধাজ্ঞার কারণে বিএনপি চার বিভাগীয় শহরের গণমিছিল একদিন পিছিয়ে ৩০ জানুয়ারিতে নিয়ে গেলে সেদিনও প্রায় একই স্থান ও সময়ে আবারও কর্মসূচি ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। ২৯ তারিখে ঘটে গুলিবর্ষণের ঘটনা!
সার্বিকভাবে সরকারের আচরণ ছিল উসকানিমূলক ও দমনমূলক। এর আগে বিএনপির কিছু কর্মকাণ্ডেও উসকানি ছিল। ডিসেম্বরের মধ্যে সরকার পতনের ডাক, ডিসেম্বরের কিছু কর্মসূচিতে সহিংসতা, খালেদা জিয়া কর্তৃক সেনাবাহিনীতে গুমের অভিযোগ এবং কিছু সেনাসদস্য কর্তৃক সেনা অভ্যুত্থানের অপচেষ্টা—এসব ঘটনা সরকারের জন্য অবশ্যই উদ্বেগজনক ছিল। কিন্তু সরকারকে মনে রাখতে হবে কোনো আশঙ্কা বা উদ্বেগ থাকলে এর প্রতিকারও আছে সরকারের কাছে। গোয়েন্দা, পুলিশ ও প্রশাসনের মাধ্যমে আশঙ্কামূলক তথ্যের সত্যতা যাচাই এবং সে অনুসারে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা, অধিকার ও সুযোগ সরকারের রয়েছে। জনগণের কাছে নাশকতা বা যড়যন্ত্রের কোনো বিশ্বাসযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পেশ না করে বিরোধী দলের এ ধরনের কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করার অধিকার সরকারের নেই। বিশেষ করে ২৯ জানুয়ারি পুলিশ যে নৃশংসতা দেখিয়েছে তা সমর্থন করার মতো কোনো পরিস্থিতি অকুস্থলগুলোতে ছিল না।
সরকারের কাছে আমাদের দাবি থাকবে ২৯ জানুয়ারির ঘটনায় সরকারের ভেতরের কোনো হঠকারী গোষ্ঠীর ভূমিকা ছিল কি না তা খুঁজে বের করা এবং এ ধরনের গোষ্ঠীর প্রাধান্য প্রতিহত করা। ২৯ জানুয়ারি পুলিশ কর্তৃক ডিসপ্রপোরশনেট (অ-সমানুপাতিক) শক্তিপ্রয়োগের যে ঘটনা ঘটেছে তার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করা।
সরকারের কাছে আবেদন থাকবে তারা কোনো কারণে অতিরিক্ত নার্ভাসনেসে ভুগছে কি না তা খতিয়ে দেখার। জানুয়ারির পর পুরো ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা থাকার কারণে বিএনপির তেমন কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না। ফলে ২৯ জানুয়ারি নির্বিঘ্নভাবে কর্মসূচি পালন করতে দিলেও বিএনপি তার শক্তি বা ব্যাপ্তি ফেব্রুয়ারিতে অব্যাহত রাখতে পারত না, সরকারের জন্য বড় কোনো সমস্যাও তৈরি করতে পারত না। ২৯ জানুয়ারি কর্মসূচি প্রতিহত করতে গিয়ে তাহলে সাধারণ মানুষকে হত্যার কলঙ্ক গ্রহণ করার কী প্রয়োজন ছিল সরকারের? মার্চে বিএনপির বড় কর্মসূচি আছে। এ রকম বৃহৎ কর্মসূচি আওয়ামী লীগও গত আমলে পালন করেছে, তাতে সরকারের পতন ঘটে যায়নি, এবারও ঘটবে এমন ভেবে ব্যতিব্যস্ত হওয়ার তেমন কোনো কারণ ঘটেনি।
সরকারের সঙ্গে বিরোধী দলের আসল বিরোধ ক্ষমতা নিয়ে। বিএনপি বদ্ধমূলভাবে বিশ্বাস করে যে আগামী সংসদ নির্বাচনে কারচুপি করার উদ্দেশ্য রয়েছে বলেই আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় রাজি হচ্ছে না। একই বিশ্বাস থেকে ১৯৯৬ সালে বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলন করেছিল আওয়ামী লীগ। সেটি যদি যৌক্তিক হয়ে থাকে তাহলে নিয়মতান্ত্রিক পথে গণ-আন্দোলন করার এবং এর মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনঃস্থাপনে চাপ সৃষ্টির অধিকার বর্তমান বিরোধী দলগুলোরও রয়েছে। গণ-আন্দোলনের পাশাপাশি বা এর আড়ালে যদি কোনো যড়যন্ত্রের চেষ্টা করা হয় সেটি প্রতিহত করার বৈধতা অবশ্যই সরকারের রয়েছে। কিন্তু তাই বলে গণ-আন্দোলনের বিকাশকে শক্তিপ্রয়োগের মাধ্যমে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করার কোনো অধিকার সরকারের নেই।
ভালো হয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমতার আগাম যুদ্ধ স্থগিত রাখে। ভালো হয় যদি অন্তত আগামী শীত পর্যন্ত মামলা, হামলা ও ভয়ভীতির মাধ্যমে বিএনপিকে খর্ব ও দুর্বল করার চেষ্টা বন্ধ থাকে, সরকারের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত আন্দোলনের চেষ্টাও স্থগিত থাকে। মোকাবিলাই যদি অনিবার্য হয়ে পড়ে তাহলে দুই দলের উচিত উপযুক্ত সময়ে জনসমর্থনের জোরে নিয়মতান্ত্রিক পথে তা করা। তবে তার আগে অবশ্যই তাদের কর্তব্য হলো সংসদ ও প্রয়োজনে সংসদের বাইরে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজার সর্বাত্মক চেষ্টা করা।
আসিফ নজরুল: অধ্যাপক, আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।