পৃষ্ঠাসমূহ

শনিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১২

তাহের, জিয়া এবং আমরা

লরেন্স লিফশুলজের সঙ্গে আমার সাক্ষাতের সুযোগ ঘটে মাত্র দুই দিন আগে। রাতের খাবারের আড্ডা, তাই কথা বলার সুযোগ ছিল অনেক। আমি লরেন্সকে জিজ্ঞেস করি, কর্নেল তাহেরের বিরুদ্ধে অভিযোগটি কী ছিল। এ ধরনের অভিযোগ সত্যি হলে কোন দেশে কী শাস্তি দেওয়া হয়। ১৯৭৫ সালে সেই বিষাদময় দিনগুলোতে বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার লিফলেটে বৈষম্যহীন সামরিক বাহিনী গঠনের কথা বলা হয়েছিল। এর জের ধরে সামরিক বাহিনীর বহু কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছিল। কর্নেল তাহের যদি এই কার্যক্রমে জড়িত থাকেন, তাহলে রাষ্ট্রদ্রোহমূলক অপরাধে তাঁর শাস্তিই তো পাওয়ার কথা! লরেন আমার ব্যাখ্যা শুনলেন। তিনি স্পষ্টভাবে আমার সঙ্গে দ্বিমত করলেন না। তবে তিনি বিচারের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। গোপন বিচার কোনোভাবে সমর্থনযোগ্য নয়। কর্নেল তাহেরের গোপন বিচারও সমর্থনযোগ্য নয়।
আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে এটিও বিশ্বাস করি, কর্নেল তাহেরের আসলে গোপন বিচারও হয়নি। বিচার মানে আত্মপক্ষ সমর্থনের পর্যাপ্ত সুযোগ পাওয়া, রায়ে এই আত্মপক্ষ সমর্থন কেন গ্রহণযোগ্য নয়, তার ব্যাখ্যা থাকা। কর্নেল তাহেরের ক্ষেত্রে তা হয়নি। তিনি তাঁর আত্মপক্ষমূলক বক্তব্য সত্যি কি না, তা পরীক্ষা করার জন্য তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সায়েম, জেনারেল ওসমানী, জেনারেল জিয়াসহ আরও কয়েকজনকে ট্রাইব্যুনালের সামনে হাজির করাতে বলেছিলেন। তা করা হয়নি। কর্নেল তাহের তাঁর জবানবন্দিতে বলেছেন, তিনি পিপলস আর্মি ধারণায় বিশ্বাস করতেন। কর্মকর্তাদের মেরে ফেলা হচ্ছে, এ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘বিপ্লবে অংশ নেওয়া সৈন্যদের প্রতি আমার আদেশ ছিল, কোনো অফিসারকে এভাবে আঘাত করা উচিত নয়।’ এটি প্রমাণ করে, বিপ্লবে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল, কিন্তু এটি প্রমাণ করে না যে হত্যাকাণ্ডে তাঁর কোনো সমর্থন ছিল। ট্রাইব্যুনালে এটি প্রমাণিত হয়েছে, এমন কোনো দলিল আমরা পাইনি।
তাঁকে বিচারের নামে আসলে হত্যা করা হয়েছে। এ রকম হত্যাকাণ্ডের (কখনো বিনা বিচারে, কখনো বিচারের নামে প্রহসনের মাধ্যমে) শিকার হয়েছেন চে গুয়েভারা থেকে আমাদের মাস্টারদা সূর্য সেনসহ সারা পৃথিবীর নানা বিপ্লবী। চে গুয়েভারা আর সূর্য সেন—এ দুজনের লড়াই ছিল সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে, তাঁদের লড়াই তখনই সফল হয়নি। তাঁদের মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। ইতিহাসে আমরা সফল বিপ্লবীও দেখি অনেক। সাইমন বলিভার প্রায় ২০০ বছর আগে স্প্যানিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়ে ছয়টি হিস্পানিক আমেরিকান রাষ্ট্রকে স্বাধীন করেছিলেন। তিনি তাঁর সর্বোচ্চ পুরস্কার পেয়েছিলেন, নিজের স্থাপিত রাষ্ট্রের ভাগ্য গড়ার ক্ষমতা তিনি পেয়েছিলেন। বিপ্লব বা মুক্তিসংগ্রাম মানেই হচ্ছে বিদ্যমান একটি ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যুদ্ধ। সেখানে পরাজয় মানে মৃত্যু, জয় মানে সর্বোচ্চ সম্মান। আমাদের বঙ্গবন্ধু, মুজিবনগর সরকারের নেতারা আর সেক্টর কমান্ডাররা দেশ স্বাধীন করতে ব্যর্থ হলে তাঁদেরও হয়তো ফাঁসি হতো। তাঁরা বিজয়ী হয়েছেন বলে সম্মানিত হয়েছেন, বাংলাদেশের মানুষের মনে চিরশ্রদ্ধার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন।
আমার প্রশ্ন জাগে, কর্নেল তাহেরের লড়াই ছিল কার বিরুদ্ধে? তিনি অন্তত শেষ দিকে জাসদের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। জাসদের বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র বা বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার জনগণের সেনাবাহিনী (পিপলস আর্মি) ধারণায় কি আমরা বিশ্বাস করি? বাংলাদেশের মানুষ কি কখনো এর পক্ষে ম্যান্ডেট দিয়েছে? তিনি যে শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতেন, তিনি নিজেকে উৎসর্গ করার যে অকুতোভয় হূদয় ধারণ করতেন, তা তাঁকে বহু মানুষের কাছে অমর করে রাখবে। কিন্তু তাঁর পদ্ধতি কি সঠিক ছিল? তাঁর পদ্ধতি ব্যর্থ হওয়ার পরিণতি আর কী হতে পারত? কিংবা তাঁর আদর্শ বা পদ্ধতিই আসলে কী ছিল?
কর্নেল তাহেরের বিচার নিয়ে হাইকোর্টের এখনকার অনুসন্ধানে এসব বিষয় আলোচিত হচ্ছে না। কেবল তাঁর বিচারের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে; সেটি ওঠা উচিত। তাঁর মতো মানুষকে আদৌ বিচার করার প্রয়োজন ছিল কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা যায়। তিনি যে আদর্শে বিশ্বাস করতেন, সে জন্য বঙ্গবন্ধু আমলে তাঁকে সেনাবাহিনী ছাড়তে হয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তাঁর কোনো বিচার করেননি সে জন্য; তাহেরকে বরং তিনি অন্য চাকরিতে নিয়োগ করেছিলেন। এই তাহের ’৭৫-পরবর্তী সময়ে সৈন্যদের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা কিংবা তাঁর চরিত্রের দৃঢ়তার জন্য এতটাই বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিলেন কি না যে তাঁকে বিচারের মুখোমুখি না করা ছাড়া উপায় ছিল না? এই প্রশ্ন নিয়ে কোনো বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ আলোচনা আমরা দেখি না।
লরেন্স লিফশুলজ তাহেরের মৃত্যুবার্ষিকীতে একটি আলোচনায় বলেছিলেন, তিনি তাহের সম্পর্কে নিরপেক্ষ নন, কিন্তু বস্তুনিষ্ঠ। আমার জানামতে, লরেন্স যে ধারার রাজনীতিতে বিশ্বাসী, তাতে তাহের সম্পর্কে তাঁর নিরপেক্ষ থাকা হয়তো সম্ভবও নয়। কিন্তু তিনি যদি নিরপেক্ষ না থাকেন, তাতে অন্য কারও নিরপেক্ষ হওয়ার প্রয়োজন শেষ হয়ে যায় না। আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে, কর্নেল তাহেরকেন্দ্রিক বিতর্কে পুরো ক্যানভাস আমরা দেখতে না চাইলে তা খুব বেশি শিক্ষণীয় বা গ্রহণযোগ্যও হবে না। পুরো ক্যানভাস দেখতে চাইলে তাহেরের আদর্শ, তাঁর কার্যক্রম, এর গ্রহণযোগ্যতা, সেই সময়ের সব ধরনের পারিপার্শ্বিক বিষয়—সবই আলোচিত হওয়া উচিত, শুধু তাঁর বিচারের পদ্ধতি নয়।

২.
তা ছাড়া, কর্নেল তাহেরকে কি জিয়াই শুধু হত্যা করেছেন। সেই বিতর্কিত ট্রাইব্যুনালের কথা বাদ রাখি, তখন যাঁরা সামরিক বাহিনীতে শীর্ষ পদে ছিলেন (যেমন—জেনারেল মঞ্জুর, জেনারেল এরশাদ, জেনারেল নুরুল ইসলাম শিশু অথবা অবসর নেওয়া জেনারেল ওসমানী), তাঁরা কি পরে কখনো দৃষ্টিযোগ্য কোনো প্রতিবাদ করেছিলেন? এমনকি আওয়ামী লীগ কি কখনো এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা বা বিচারের উদ্যোগ নিয়েছিল? আমরা গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও কিছু হত্যাকাণ্ডের বিচারের উদ্যোগ দেখেছি, কিন্তু কর্নেল তাহের হত্যাকাণ্ডের নয়। এবারও এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে আদালতের অনুসন্ধান শুরু হয়েছে ব্যক্তি উদ্যোগে, কোনো সরকারি উদ্যোগে নয়। আদালত এ বিষয়ে যথেষ্ট আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এটি খুবই ভালো একটি বিষয় হবে, যদি সব হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আদালত তাঁর আইনগত অনুসন্ধানে সমানভাবে আগ্রহী হন। আমরা যদি আওয়ামী লীগ আমলে কর্নেল তাহেরের হত্যাকাণ্ড নিয়ে আর কোনো এক বিএনপি আমলে সিরাজ সিকদারের হত্যাকাণ্ড নিয়ে মামলায় আদালতের আগ্রহ দেখি, তাহলে তা অনেককে বিভ্রান্ত করবে।
লেখক হিসেবে লরেন্স তাঁর কাজ করেছেন। এর ভিত্তিতেই এর চেয়েও পরিপূর্ণ কোনো অনুসন্ধান আমাদের করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কেনেডি হত্যার বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের শতাধিক পুস্তক লেখা হয়েছে। আমার মতে, কোনোটিই পুরো সঠিক নয়। পৃথিবীর কোনো বিশ্লেষকের পক্ষে শতভাগ সঠিক বিশ্লেষণ করা সম্ভব নয়। শতভাগ সঠিক কেবল অঙ্ক করা সম্ভব। রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের বিশ্লেষণ বা আইনের প্রয়োগ অঙ্ক নয়। একই তত্ত্বাবধায়ক সরকারসংক্রান্ত মামলায় প্রায় একই সময়ে আমরা উচ্চ আদালতের দুই ধরনের ব্যাখ্যা দেখেছিলাম। সে জন্য ১৯৭৫ সালে আসলে কী ঘটেছিল এবং এর নানামুখী ও গভীরতর বিশ্লেষণ আমাদের নানাভাবে করা উচিত।
বস্তুনিষ্ঠ আলোচনার ক্ষেত্রে আরেক বিপদ শুধু পত্রিকার উপস্থাপনার ওপর নির্ভরতা। গত দুই বছরে অধিকাংশ গণমাধ্যম যেভাবে জিয়াকেন্দ্রিক বিভিন্ন ঘটনার বিশ্লেষণ করেছে, তাতে মনে হতে পারে, বাংলাদেশে সব রাজনৈতিক আর শাসনতান্ত্রিক দুর্গতির মূলে তিনিই ছিলেন। একই ঘটনা ঘটেছিল বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী পাঁচ-সাত বছরে। বঙ্গবন্ধুকে ডেমোনাইজ করা ছিল নিন্দনীয়, অন্য কাউকে ডেমোনাইজ করাও একইভাবে নিন্দনীয়। যে তাহেরের অন্যায় বিচারের মূলে জিয়াউর রহমান ছিলেন বলা হচ্ছে, তাঁর শেষ জবানবন্দিতে তিনিই মুক্তিযুদ্ধকালে এবং পরবর্তী সময়ে জিয়ার অবদান প্রশংসনীয়ভাবে তুলে ধরেছেন। তাহের বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করেছেন। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্র, পাকিস্তান, আওয়ামী লীগের কিছু নেতা ও সামরিক বাহিনীর কিছু কর্মকর্তাকে দায়ী করেছেন; জিয়াকে কোথাও নয়। অবস্থিত বাস্তবতায় তাহেরই ১৫ আগস্টের পর সামরিক শাসন জারি করতে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, সংবিধান স্থগিত রাখতে বলেছেন (তিনি একই সঙ্গে রাজবন্দীদের মুক্তি ও নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাবও করেছিলেন), নভেম্বরে তিনি জিয়াকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হতে বলেছিলেন (তাঁর বর্ণনামতে, আলোচনার একপর্যায়ে জিয়া তাতে রাজি হন)। কর্নেল তাহের জিয়াকে বিশ্বাসঘাতক বলেছেন তাঁকে বন্দী করার ঘটনা বর্ণনাক্রমে। কিন্তু যে তাহেরের বিচারের জন্য বিভিন্ন বিশ্লেষণে জিয়াকে সবকিছুর জন্য প্রায় এককভাবে দায়ী (সিঙ্গেল আউট) করা হচ্ছে, তিনি নিজেই তাঁর জবানবন্দিতে এ ধরনের কোনো ধারণার কথা বলেননি। কিছু পত্রিকা তা-ই বলছে। আদালতের কিছু রায়েও জাতির রাজনৈতিক ইতিহাস বর্ণনা করতে গিয়ে অন্যদের ব্যর্থতার কথা না বলে কিছু ক্ষেত্রে জিয়াকেই প্রধানত দায়ী করা হচ্ছে।

৩.
জিয়াউর রহমানের দোষ-ত্রুটি ছিল। কিন্তু তাহেরের মৃত্যুর সিদ্ধান্ত তিনি দিয়েছিলেন, এই অনুসিদ্ধান্ত আমরা মৃত একজন ব্যক্তির (জেনারেল মঞ্জুর) বক্তব্য হিসেবে প্রচারিত সাক্ষ্যের ওপর নির্ভর করে নিতে পারি কি? লরেন্স এখন বলছেন যে জিয়া বঙ্গবন্ধু হত্যার জন্য পরোক্ষভাবে দায়ী ছিলেন। হতে পারে। কিন্তু তিনি দায়ী হলে জেনারেল সফিউল্লাহসহ তৎকালীন সব বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারাও দায়ী ছিলেন না কেন? আওয়ামী লীগের তখনকার বহু নেতা নয় কেন? কেন আওয়ামী লীগের আমলে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের যে বিচার হলো, তাতে জিয়াকেও তাহলে অভিযুক্ত করা হলো না? যে যুক্তরাষ্ট্র নিজেই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী বলে বিভিন্নভাবে অভিযুক্ত, তার অবমুক্ত করা নির্বাচিত দলিলই কেন হবে এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য ও বিশ্বাস?
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড রোধে আমরা সমষ্টিগতভাবে ব্যর্থ হয়েছি। বঙ্গবন্ধুকে আত্মঘাতীমূলক চতুর্থ সংশোধনী জারি করার দিকে আমরা সমষ্টিগতভাবে ঠেলে দিয়েছি। তিনি চতুর্থ সংশোধনী পাস করার দিন সংসদে দেওয়া ভাষণে এই করুণ চিত্রই তুলে ধরেছেন। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের সুবিধাভোগী জনগোষ্ঠীর যে মাপ, তিনি তার চেয়ে অনেক বেশি উচ্চতার মানুষ ছিলেন। এই জনগোষ্ঠীর মাপ যদি হয় পাঁচ ফুট, তিনি ছিলেন ১০ ফুট মানুষ। জাতীয় চার নেতা, জিয়া, তাহের, খালেদ মোশাররফ, মঞ্জুর—এঁদের মাপও ছিল পাঁচ ফুটের বেশি। গালিভারদের নিয়ে লিলিপুটরা স্বস্তিতে থাকে না। আমরা হয়তো তাই আমাদের সব গালিভারকে বিভিন্নভাবে মেরে ফেলেছি বা মেরে ফেলার পরিস্থিতি তৈরি করেছি (যে এরশাদ আমাদের মাপের, তাকে আমরা সম্মানের সঙ্গে রেখেছি)।
বড় মানুষদের মেরে ফেলেই আমরা থামিনি। আমরা আমল বুঝে তাঁদের কাউকে কাউকে আরও বিভিন্নভাবে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছি। আসলে আমাদের সব বড় মানুষকে সম্মান করতে হবে। তাঁদের দোষ-ত্রুটি, পাণ্ডিত্য ও সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করতে হবে। তাঁদের অবদানের কথা সবাইকে বলতে হবে।
স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা আর অর্জনের আকাশে বড় মানুষেরা সবাই উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো। কারও আলো বেশি, কারও কম; কিন্তু তাঁরা সবাই নক্ষত্র। রাজনৈতিক কূটালাপ, সুবিধাবাদী চরিত্রহনন আর কাপুরুষোচিত নীরবতার কালো মেঘে তাঁদের আড়াল করতে চাইলে শ্রদ্ধাহীন, আত্মগর্বহীন আর বিভ্রান্ত হয়ে বেড়ে উঠবে আমাদের নতুন প্রজন্ম। তাতে আমরাই ক্ষতিগ্রস্ত হব।
আসিফ নজরুল: রাজনৈতিক বিশ্লেষক, গবেষক, আইনের অধ্যাপক।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন